প্রখ্যাত আল কুরআন বিশেষজ্ঞ  প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ. এফ. এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) হুজুরের সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আন্তর্জাতিক আশেকে রাসূল সংস্থার মহাসচিব বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ  তিনি ইমামুল আশেকীন, শায়েখুল আকবার ডক্টর সৈয়দ এম.সাঈদুর রহমান আল্-মাহ্বুবী (মাঃ আঃ) ও দুররে মাকনুন খাতুনে জান্নাত কুতুবুল আকতাব ডক্টর সৈয়দা তাহ্মিনা সুলতানা (মাঃ আঃ) হুজুরের জেষ্ঠ্য সন্তান। তিনি ২৭শে সেপ্টেম্বর ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জন্মগ্রহণের পূর্বে তাঁর পিতা-মাতা বহু ভাল ভাল স্বপ্ন দেখেন। পরবর্তীতে তাঁর জন্মের সময় বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনা দেখে তাঁর পিতা-মাতার বুঝতে আর বাকি রইলো না যে, একদিন সে অনেক বড় অলী-আল্লাহ্ হবে। এছাড়া একজন বিখ্যাত জ্যোতির্ষী তাঁর পিতার ছাত্র জীবনে তাঁকে দেখে ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন যে, “আপনার দু’টি ছেলে সন্তান হবে। তারা দুইজনই হবে আল্লাহ্ ওয়ালা। তবে আপনার বড় সন্তান হবে বিশ্বখ্যাত আল্লাহর -অলী। যার সুনাম-সুখ্যাতি হবে বিশ্বজোড়া।” তাঁর দাদা ছিলেন বিশিষ্ট সূফী সাধক হযরত আবদুর রহমান সরকার (রহঃ) ও তাঁর দাদী আমেরিকার নাগরিক মিসেস আনোয়ারা বেগম। তাঁর নানা ছিলেন- শাহ সূফী হযরত সৈয়দ মাহবুবে খোদা (রহঃ) ও তাঁর নানী প্রাক্তন কুতুবুল আকতাব সৈয়দা হামিদা বেগম (রহঃ)।
প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) পিতা-মাতার আদর স্নেহের পাশাপাশি নানা-নানীরও অত্যন্ত প্রিয়ভাজন ছিলেন। শুধু তাই নয় শৈশবেই তিনি তাঁর নানাজীর সফর সঙ্গী হয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ধর্ম প্রচারের কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। তাঁর নানাজীর সাথে থাকার সুবাদে তাঁর দরবারে আগত দেশের রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, বিচারপতিসহ সরকারের সকল উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ তাকে বিশেষভাবে পছন্দ করেন। তাঁর সুদশর্ন চেহারা ও রুচিশীল কথা শুনে তাঁরা সবাই মুগ্ধ হয়ে তাঁকে খুব আদর করতেন। এমনকি একদিন এক বিচারপতি তাঁকে সব সময় তাঁর নানাজীর সাথে দেখে সবার সামনে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আসলের চেয়ে সুদের দাম অনেক বেশী।” এর দ্বারা তিনি বুঝালেন, নানার কাছে সন্তানের চেয়ে নাতীর দাম অনেক বেশী। শৈশব থেকেই তিনি ইসলাম প্রচারে স্বক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতেন। তরীকতের প্রতি তাঁর আগ্রহ দেখে তাঁর নানাজী তাঁকে নিজের কাছে কাছে রেখে আধ্যাত্মিকতার বিভিন্ন বিষয় তালিম দিতেন। পাশাপাশি তাঁর মাতাও তাঁকে মোরাকাবার বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়মিত শিক্ষা দিতেন, যা তার পরবর্তী জীবনের দৈনন্দিন রুটিনে পরিণত হয়।
শৈশব থেকে প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) আল্লাহ্কে পেয়ে অলী-আল্লাহ্ হওয়ার খুব আকাঙ্খা ছিল। তিনি প্রথম যেদিন স্কুল জীবন শুরু করেন, সেদিন স্কুলের একজন শিক্ষিকা ক্লাসে খেলার ছলে ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করেন- “বাবারা বলো তো দেখি, তোমরা বড় হয়ে কে কি হতে চাও?” একে একে সবার কথা শুনে প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ)-এর কাছে এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, “বাবা! তুমি বড় হয়ে কি হতে চাও?” তখন তিনি বললেন, “আমি বড় হয়ে অলী-আল্লাহ্ হতে চাই।” সেই সময় ঐ শিক্ষিকা অলী-আল্লাহ্ সম্পর্কে না জানার করণে আবরো একই প্রশ্ন করলেন। প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) আবারো বললেন, “আমি বড় হয়ে অলী-আল্লাহ্ হতে চাই।” তখন সে শিক্ষিকা তাঁর কাছে জানতে চাইলেন, অলী-আল্লাহ্ কি? সে সময় শিশু বরকত-এ-খোদা তাঁর মত করে শিক্ষিকাকে বুঝিয়ে দিলেন। সেদিন ক্লাস শেষ হলে ঐ শিক্ষিকা তাঁর মাতা কুতুবুল আকতাবের কাছে অলী-আল্লাহ্ সম্পর্কে জানতে চাইলেন। তাঁর মাতা ঐ শিক্ষিকাকে অলী-আল্লাহ্ সম্পর্কে বুঝিয়ে বলার পর ঐ শিক্ষিকা বিষয়টি বুঝতে পারলেন এবং অনেক খুশি হয়ে তাঁর জন্য দোয়া করলেন। আর আল্লাহ্কে পাওয়ার লক্ষ্যে প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) পড়াশোনার সময় বাদে বাকি পুরো সময় ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে কাটাতেন।
তাঁর শৈশবের একটি ঘটনাঃ প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) যখন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়তেন। সে সময় রমজান মাসে তিনি আল্লাহ্কে পাওয়ার লক্ষ্যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও রোজার পাশাপাশি ওয়াজিফার সকল আমল পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে পালন করেন। সে বছর শবে কদরের রাতে সারারাত জেগে নামাজ, দরূদ, মিলাদ ও মোরাকাবার মধ্য দিয়ে রাত্রি অতিবাহিত করেন। পরদিন রাতে তিনি স্বপ্নে দেখেন দয়াল নবীজি হযরত মুহাম্মদ (সঃ) ও তাঁর নানাজী একটি সুন্দর বাগানে দাঁড়িয়ে আছেন। সে বাগানের কিছু কিছু স্থানে অল্প সংখ্যক মানুষ এহরামের জামা পরিধান করে দাঁড়িয়ে আছেন। এমন সময় প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) বাগানে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ তাঁদের সাথে সাক্ষাৎ হলো। তিনি আদবের সাথে তাঁদের সালাম করলেন, সে সময় তাঁর নানাজী দয়াল নবীজি (সঃ)-এর কাছে নিবেদন করলেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ বছর ‘আমার নাতি’ সবগুলো রোজা রেখেছে, নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও প্রতিদিন শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেছে। আপনি দয়া করে তাঁর সকল ইবাদত-বন্দেগী কবুল করে তাঁকে বড় অলী-আল্লাহ্ বানিয়ে দিন।” একথা শুনে নবীজি হাসি দিয়ে বললেন, “যাও, আমি তোমায় অনেক বড় অলী-আল্লাহ্ বানিয়ে দিলাম।” এ স্বপ্ন দেখে প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) খুব আনন্দিত হলেন। তিনি ঘুম থেকে উঠে তাঁর পিতা-মাতাকে স্বপ্নের কথা জানালেন।
শৈশবে যে সময় শিশুরা বন্ধুদের সাথে ক্রিকেট, ফুটবল ইত্যাদি খেলা খেলে অতিবাহিত করে। সে সময় প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) নিজের ঘরে খাটে বালিশের উপর বসে গোলাপ জ্বলের বোতল দিয়ে মাইক বানিয়ে বাসায় কাজের লোকদের সামনে বসিয়ে শ্রোতা বানিয়ে নিজে ওয়াজ করে মাহ্ফিল খেলতেন, যা সত্যিই এক বিরল ঘটনা। তাঁর এহেন কর্মকান্ড জাকের মহলে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মানুষ যখন বিপদে পড়ে তাঁর কাছে আসে, তখন তিনি মোরাকাবায় বসে সমস্যার সমাধান দেন এবং পরক্ষণেই আল্লাহ্র রহমতে বিপদগ্রস্থ ব্যক্তির বিপদ মুক্ত হতো ও অভাবগ্রস্থ ব্যক্তির অভাব দূর হতো অর্থাৎ যে যেই মকসুদ নিয়ে আসতো তা পূরণ হতো। তাঁর জীবনে এরকম বহু ঘটনা আছে।
একবারের এক ঘটনাঃ প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ)-এর বয়স তখন ৬ বছর। তাঁর একজন গৃহ শিক্ষক ছিলেন। তিনি ভাইরাস জনিত কারনে প্রচন্ড জ্বরে আক্রান্ত। তখন বহু ডাক্তার দেখানোর পরও কোন পরিবর্তন হচ্ছিল না, বরং আরো দিন দিন শরীর খারাপ হচ্ছিল। তখন সেই গৃহ শিক্ষককে প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) দেখতে গেলেন। দেখেন শিক্ষকের ১০৬ ডিগ্রী জ্বর! অবস্থা খুব খারাপ। এই অবস্থা দেখে প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) শিক্ষকের মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন এবং প্লেটে করে পানি এনে নিজ হাতে তার কপালে জল পট্টি দিতে লাগলেন। এ সময় অসুস্থ শিক্ষক চোখ মেলে তাকালেন এবং তাঁর হাত ধরে বললেন, বাবা আমাকে সুস্থ করে দেন। না হয় আমি আর বাঁচতে পারবো না। এসময় প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) বুঝতে পারলেন, শিক্ষকের অবস্থা ভীষণ খারাপ। তখন তিনি সেখানে বসেই মোরাকাবার মাধ্যমে মহান আল্লাহ্র কাছে শিক্ষকের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করতে লাগলেন। দীর্ঘক্ষণ পর মোরাকাবা শেষ হলে প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) শিক্ষককে বললেন, স্যার! আপনি এখনই সুস্থ হয়ে যাবেন। একথা বলা মাত্রই ঐ শিক্ষক উঠে বসে পড়লেন। পরে জ্বর মেপে দেখা গেলো তার আর জ্বর নেই, সে পূর্ণ সুস্থ। এমন বহু অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) হুজুরের শৈশব জীবনে।
প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) আধ্যাত্মিক সাধনার উচ্চতর মাকামে তথা দায়রার সবক মশ্ক করেছেন এবং তিনি আধ্যাত্মিক জগতের বিভিন্ন রহস্য উন্মোচন করেছেন। এমনকি তিনি যে কোন বিপদ সংকুল পরিস্থিতিতে মোরাকাবার মাধ্যমে আল্লাহ্ ও হযরত রাসূল (সঃ)-এর কাছে থেকে সমাধান নিতে পারেন। তাঁর জীবনে অন্যতম প্রধান ইচ্ছা ছিল দয়াল নবীজি (সঃ)-এর দেশে সফর করার। মহান আল্লাহ্ দয়া করে তাঁর প্রার্থনা কবুল করেন। তিনি ২০১১ সালে সপরিবারে ওমরা হজ্বে ও দয়াল নবীজি (সঃ)-এর জিয়ারতে যান। এই সফরে তিনি হযরত রাসূল (সঃ)-এর বহু অলৌকিক মুজেজা প্রত্যক্ষ করেন।
প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ)-এর শিক্ষা জীবনে একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। পরে বৃটিশ কাউন্সিল হতে ইংরেজী ভাষার সর্বোচ্চ কোর্স তিনি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ইসলামের প্রকৃত ইতিহাস জানার লক্ষ্যে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে বি.এ. অনার্স ও এম.এ. পরীক্ষায় ফার্ষ্ট ক্লাস ফার্ষ্ট হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। পাশাপাশি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আই.এম.এল. হতে আরবী ভাষার উপর উচ্চতর কোর্স সম্পন্ন করেন। তাঁর ব্যাচে আরবী বিভাগে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে তিনি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাঁর শিক্ষা ক্ষেত্রে এরূপ ফলাফলের কারণে অল্পদিনেই শিক্ষক ও ছাত্র সমাজে তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পরে। এর পাশাপাশি তিনি দেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ হতে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে বি.এ. অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে চ্যান্সেলর্স গোল্ড মেডেল লাভ করেন। পরে এম.এ. পরীক্ষায় ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে চ্যান্সেলর্স গোল্ড মেডেল লাভ করেন। এছাড়া তিনি ইংলিশে এম. এ. পরীক্ষায়ও ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট হন। গোল্ড মেডেল প্রদানের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অনুষ্ঠানে সবার সামনে উচ্চস্বরে বলেছিলেন, “যেমন শ্রেষ্ঠ পিতা, যেমন শ্রেষ্ঠ মা, ঠিক তেমনই শ্রেষ্ঠ সন্তান।” সে সময় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান বললেন, “না স্যার! ছেলে একটু বেশী-ই শ্রেষ্ঠ।” একথা শুনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই উচ্চস্বরে হাসতে লাগলেন। বিপুল করতালির মাধ্যমে সবাই তাঁকে অভিনন্দন জানালেন। প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা জীবনে প্রতিটি সেমিস্টারে স্কলারশীপ লাভ করে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) বিদেশের মাটিতে গমণ করেন। তাঁর দীর্ঘ প্রচেষ্টা ও সুকঠিন অধ্যবসায় ও গবেষণার ফলশ্রুতিতে উচ্চ শিক্ষার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি স্বরূপ বৃটেনের বিখ্যাত কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটি হতে তিনি “A Study on Past and Present of Mohammadi Islam”(মোহাম্মদী ইসলামের অতীত ও বর্তমান) বিষয়ে গবেষণার জন্য পি-এইচ.ডি. ডিগ্রী লাভ করেন। তাঁর এই গবেষণার সুপারভাইজার ছিলেন- কমওয়েলথ ইউনিভার্সিটির ফিলোসফি ও রিলিজিয়ন স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. বার্নহার্ট জিও এডওয়ার্র্ড, কো-সুপারভাইজার ছিলেন- ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. এম.এ.এস. আব্দুল হালিম। তাঁর এই পি-এইচ.ডি. থিসিস কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন-এর শিক্ষকদের এতটাই ভাল লেগেছে যে, কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন নিজস্ব ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরীতে মডেল থিসিস হিসেবে এই থিসিসটি বিশেষভাবে সংরক্ষণ করে। তাঁর পি-এইচ.ডি. ডিগ্রী লাভের সংবাদ বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় ৮২টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে তিনি কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটির আজীবন এলামনাই সদস্য। এছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক গবেষণা সংগঠন “ওয়ার্ল্ড রিসার্চ ইউনিয়ন” এর সদস্য। পাশাপাশি তিনি ক্যামব্রিজ লার্নিং এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো এবং ব্রিটেনের বিখ্যাত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ফিলোসোফিক্যাল সোসাইটির সিনিয়র রিসার্চ।
প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ)-এর শৈশব থেকেই মুসলিম হিসেবে আল্ কুরআন শেখার খুব আগ্রহ ছিল। তাই তিনি শৈশবে গৃহের ধর্মীয় শিক্ষকের কাছ থেকে আল্ কুরআন শিক্ষা করেন। অতঃপর বেইলী প্রিপারেটরী স্কুল থেকে প্লে- গ্রুপে কেরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে প্রথম পুরস্কার লাভ করেন। পরবর্তীতে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আরো বহু পুরুস্কার লাভ করেছেন। এরপর তিনি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ কেরাত সংঘঠন ‘বিশ্ব কেরাত সংস্থা’ (ইত্তেহাদুল কুররা আল-আলামীরা’র) প্রেসিডেন্ট বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ কারী ড. আহমেদ নাইনা-এর কাছ থেকে আল্-কুরআনের পরিপূর্ণভাবে জ্ঞান লাভ করেন।
বর্তমানে প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) দেশে ও বিদেশে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে প্রখ্যাত আল্-কুরআন বিশেষজ্ঞের মর্যাদা লাভ করেছেন। তাঁর তেলাওয়াত বাংলাদেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বহু দেশের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত হয়েছে। শুধু তাই নয়! বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি এই আল্-কুরআনের জ্ঞান সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে তাঁর পিতা ডক্টর সৈয়দ এম. সাঈদুর রহমান আল্-মাহ্বুবী (মাঃ আঃ) হুজুরের প্রতিষ্ঠিত ইনস্টিটিউট অব আল্-কুরআন-এর ডাইরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) শিক্ষা জীবন শেষ করে ধর্ম প্রচারে পরিপূর্ণ আত্মনিয়োগ করেন। এলক্ষ্যে তিনি পৃথিবীর বহু দেশে মোহাম্মদী ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে সফর করেছেন। দেশে-বিদেশে তাঁর মনোমুগ্ধকর ও গাম্ভির্যপূর্ণ আলোচনা শুনে লক্ষ লক্ষ মানুষ হযরত রাসূল (সঃ)-এর প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে ইসলামের দীক্ষা লাভ করছে, পাশাপাশি তাঁর সফরকে কেন্দ্র করে আশেকে রাসূলদের মাঝে এক নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার আমেরিকান ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ও পি-এইচ.ডি. সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মহান আল্লাহ্র অপার দয়ায় তাঁর বলিষ্ট তত্ত¡াবধানে বহু দেশী ও বিদেশী ছাত্র পি-এইচ.ডি. ডিগ্রী লাভ করে তাঁরা দেশ-বিদেশে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে সম্মানজনক পদে চাকুরী করছে।
প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক্রেডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য। তিনি সাপ্তাহিক ‘জান্নাত’ ও মাসিক ‘সিরাজাম-মুনীরা’র সম্পাদক। তিনি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ধর্মীয় বিষয়াদির উপর নিয়মিত লেখা-লেখি করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক তাঁর পিতার নামে প্রবর্তিত “ডক্টর সৈয়দ এম. সাঈদুর রহমান আল্-মাহ্বুবী গোল্ড মেডেল” ট্রাস্ট ফান্ডের সদস্য। তিনি “মিরাকেল এস্টেট লিঃ”-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর। এমনকি তিনি ‘হিউম্যান রাইডস ফাউন্ডেশন’-এর একজন আজীবন সদস্য। প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) ব্যক্তিগত জীবনে মানুষকে জ্ঞানের আলো পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে লেখা-লেখি করতে খুব পছন্দ করেন। তাঁর লেখা ভ্রমণ কাহিনী অবলম্বনে “বিশ্বনবী (সঃ)-এর দেশে আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ দশদিন” এবং মুসলিম নর-নারীদের সুন্দর সুন্দর নাম সম্বলিত গ্রন্থ “আদর্শ মুসলিম নামের অভিধান” এই গ্রন্থ দুটি পাঠক মহলে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এছাড়া জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকায় প্রকাশিত ইসলামীক প্রবন্ধ, গল্প, লিখে লেখক হিসেবে বেশ খ্যাতি লাভ করেছেন। “মোহাম্মদী ইসলামের অতীত ও বর্তমান” গবেষণা মূলক গ্রন্থখানা লিখে তিনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ লেখকগণের তালিকায় নিজের স্থান করে নিয়েছেন। এই গবেষণা মূলক প্রবন্ধ রচনা করে সুশীল সমাজসহ সর্বমহলের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছেন।
প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) শিক্ষকতার পাশাপাশি ধর্ম প্রচারে একজন অক্লান্ত পরিশ্রমী ব্যক্তিত্ব। তিনি ইসলাম প্রচারে পূর্ণ আত্মনিয়োগে ও ইসলামী গবেষণা এবং লেখা-লেখিতে নিজেকে সব সময় ব্যস্ত রাখেন। বর্তমানে তিনি রাসূলের চিরশান্তির ধর্ম ইসলাম বিশ্বব্যাপী প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আশেকে রাসূল সংস্থা সদর দপ্তর মিরপুর দরবার শরীফের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। আমরা তাঁর সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও সাফল্যময় জীবন কামনা করি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *